প্রকাশিত: Thu, Apr 18, 2024 1:34 PM
আপডেট: Sun, May 19, 2024 8:29 AM

‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’ : দেখা যায়, দেখা উচিত

আনিসুল হক : বাংলাদেশের সিনেমার মধ্যে আমার দেখা সেরা ছবি হলো, [১] সূর্যদীঘল বাড়ি, [২] মুক্তির গান। আরো ভালো ছবি নিশ্চয়ই আছে। তবে আমার এই দুটোর নামই মনে পড়লো। আর অন্য দেশের সিনেমার মধ্যে টার্টলস ক্যান ফ্লাই, ব্যালাড অব আ সোলজার, মাই আর্কিটেক্ট, ইন আমেরিকা, আন্ডার দ্য সেইম মুন আমার প্রিয়। পথের প্যাঁচালী অবশ্যই প্রিয়। সাম্প্রতিক দেখা ছবির মধ্যে ভালো লেগেছিল প্যারাসাইট। মিরাকল ইন সেল নাম্বার সেভেন। বাংলাদেশে বানানো বেশির ভাগ সিনেমা, টিভি নাটক ইত্যাদি দেখতে আরম্ভ করা যায়, শেষ করা যায় না, এরকম আমার ধারণা। 

‘মাইসেল্ফ অ্যালেন স্বপন’ ভালো লেগেছিল। এবার ঈদে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’ দেখার সময় আমি ?‘প্যারাসাইট’ বা ‘পথের প্যাঁচালী’ দেখব বলে বসিনি। আমার কোনো এক্সপেকটেশন ছিল না। আমি আর মেরিনা একসঙ্গে ঈদের দিন বসে পুরো সিনেমা দেখে ফেললাম। দুই তিনবার খিকখিক করে হেসে উঠলাম। যেমন: চঞ্চল যখন বলছিল, আমি বেঁচে ফিরে আসছি, এতে তুমি খুশি না হয়ে আমি মারা গেলে খুশি হতে? আমার একটা জরুরি কাজ পড়ল, তাই ফ্লাইট বদলে কক্সবাজার গেলাম, এক্সকিউজ শুনে হাসি থামানো মুশকিল। আর যখন একই শাড়ি পরে দুইজনের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো, তখন ভয়েই মরে যাই। হায় হায়, এখন কী হবে। 

তারপর একসময় সিনেমাটা শেষ হলো। খেলা খতম, পয়সা হজম। আজকাল কোনো কাজই তো শেষ পর্যন্ত দেখা যায় না, মনোগামী শেষ পর্যন্ত এক বৈঠকে দেখেছি এবং উপভোগ করেছি। পরে স্বনন শাহরিয়ার আর ওমর শরিফের রিভিউয়ে বহু ভ্যালিড পয়েন্ট পেলাম। জেফার যদি বিখ্যাত গায়িকা, মেট্রোতে কেউ তাকে চিনবে না কেন। চঞ্চল যদি অ্যাড এজেন্সির সিইও, মদ যে চামচে খায় না, জানবে না কেন। যৌক্তিক প্রশ্ন। ওমর শরিফ বলেছেন, সরয়ার ভাই, আপনার এত তাড়া কিসের। এটাও অযৌক্তিক কথা নয়। স্বনন শাহরিয়ার নারীবাদী প্রশ্ন যা তুলেছেন, তা ভাবায়। তবে সমাজে নারী নিগৃহীত হলে, দুনিয়াটা পুরুষের হলে নাটক-সিনেমায় তাদেরকে বিজয়ী দেখানো যায় না। 

সিনেমা তো সমাজেরই প্রতিফলন। জেফার খুব ভালো অভিনয় করেছেন। প্রেমা আর রাই আর শুদ্ধর অভিনয়ও ভালো লেগেছে। চঞ্চলের প্রশ্নে ফারুকী বোধহয় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন, সে কি আমার মতো খ্যাত নাকি তার মতো স্মার্ট হবে, ফারুকী সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। চঞ্চলের সংলাপের প্রমিত অপ্রমিত দ্বন্দ্ব ছিল। আমাকে যদি বলেন, মনোগামী কেমন। আমি বলব, ওয়ার্থ ওয়াচিং। দেখা যায়, দেখা উচিত। দেখে ফেলেন। দেখে দুই লাইন স্ট্যাটাস লেখেন। পক্ষে বা বিপক্ষে। এইটা এখনকার ট্রেন্ড। ট্রেন্ড বলে আমিও লিখলাম। সরয়ার ফারুকীর সেরা কাজ ‘প্রত্যাবর্তন’। ‘৫১বর্তী’। ‘টেলিভিশন’। ওগুলোর সঙ্গে আবার আনিসুল হক নামটা ছিল। হা হা হা।  সরয়ার, ‘মা’ বানাও। ১৬.৪.২৪। ফেসবুক থেকে